1. admin@krishisangbad.com : admin :
ডিমের বাজার নিয়ে খেলছেন ব্যবসায়ীরা - কৃষি সংবাদ
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন

ডিমের বাজার নিয়ে খেলছেন ব্যবসায়ীরা

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৯ বার পঠিত

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:

ডিম আমদানি, দাম নির্ধারণ করে দেওয়াসহ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের পরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না বাজার। চট্টগ্রামে উল্টো বাড়ছে দাম। দামের এমন নাভিশ্বাস অবস্থার জন্য দায়ী বড় পাইকার ও কিছু মধ্যস্বত্বভোগী। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে কারসাজির হোতা বড় পাইকারদের নাম। অন্তত ৩০ পাইকার ও মধ্যস্বত্বভোগীর কারসাজির কারণেই ডিমের বাজারে ফিরছে না স্বস্তি।

সম্প্রতি দাম নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা বেঁধে দিয়েছে। এ হিসাবে প্রতিডজন ডিমের দাম হওয়ার কথা ১৪২ টাকা। তবে এ দর সীমাবদ্ধ আছে কেবল কাগজে-কলমেই। চট্টগ্রামের বাজারে প্রতি পিস ডিম কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে প্রায় ১৪ টাকা। প্রতিডজন ডিমের দাম পড়ছে ১৬০ টাকার বেশি।

টিসিবির তথ্যানুসারে, গত এক মাসে প্রতিডজন ডিমের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ, যা প্রায় ১৫ টাকা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরবরাহ ঘাটতি দেখিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ডিমের দাম বাড়ানোর কারসাজিতে অন্তত ৩০ জন বৃহৎ পাইকারি ব্যবসায়ী জড়িত। তাদের অধিকাংশই চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি মোকাম পাহাড়তলী বাজারের ডিমের বড় ব্যবসায়ী। তাদের সঙ্গে আছে চট্টগ্রামে ডিম সরবরাহের প্রধান এলাকা টাঙ্গাইলের কিছু ব্যবসায়ী ও মধ্যস্বত্বভোগী। কয়েক ধাপে ডিম নিয়ে কারসাজি করতে এসব অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের কাছে রাখে না ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো রসিদ। কত দামে ডিম কেনা ও তা কত দামে বিক্রি– গুরুত্বপূর্ণ এই দুই তথ্য লুকাতেই রসিদ গায়েবের কৌশল অবলম্বন করেছে তারা। তথ্যমতে, চট্টগ্রামে প্রতিদিন প্রায় ২৫ লাখ ডিমের চাহিদা রয়েছে। এর প্রায় ৮০ শতাংশই আসে টাঙ্গাইল থেকে।

কারসাজির সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম পাওয়া গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার কারসাজির প্রমাণ পেয়েছিল জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, ক্যাবসহ কয়েকটি সংস্থা। এসব সংস্থার পাশাপাশি এবার তাদের ব্যাপারে কাজ শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থাও।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সে অভিযান চালিয়ে কারসাজি করে কম দামে কেনা ডিম বাড়তি দামে বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গত ৩ জুলাই আল আমিন স্টোরে অভিযান চালিয়ে সংকট দেখিয়ে কারসাজি করে বেশি দামে ডিম বিক্রির প্রমাণ মেলে। গত জুনে জান্নাত পোলট্রির বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল থেকে ১১ টাকা ২০ পয়সা দরে কেনা প্রতিটি ডিম পাইকারি পর্যায়ে ১২ টাকা থেকে ১২ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় জরিমানা করে প্রশাসন। এসব প্রতিষ্ঠানের নানা কৌশল ও কারসাজির কারণে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের সুফল ভোক্তারা পাচ্ছেন না বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

এ প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ বলেন, যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। কারণ খুঁজতে গিয়ে কারসাজিতে পাহাড়তলী বাজারের বড় পাইকাররা জড়িত বলে তথ্য প্রমাণ মিলেছে। তাদের বিরুদ্ধে এর আগেও কারসাজির প্রমাণ মিলেছে। টাঙ্গাইলের কিছু ব্যবসায়ী ও মধ্যস্বত্বভোগীও এর সঙ্গে জড়িত। কয়েক মাস ধরে তারা ডিমের বাজার নিয়ে নয়ছয় খেলছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শুক্কুর বলেন, পাইকাররা সরকারের বেঁধে দেওয়া দর মানছে না। পাইকারিতেই প্রতি পিস ডিম কিনতে হচ্ছে ১২ টাকার ওপরে। নানা খরচ যুক্ত হয়ে খুচরাতে গিয়ে দাম আরও বেশি পড়ছে।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, অসাধুদের কারসাজির কারণে ডিমের দাম ১৬০ টাকার ওপরে চলে গেছে। বাড়তি দামের জন্য পাহাড়তলী বাজারের বড় পাইকাররা দায়ী। এর প্রমাণ পেয়েছি আমরাও। তবে এখানকার অনেকের বিরুদ্ধে অতীতে প্রশাসন কারসাজির প্রমাণ পেলেও সামান্য কিছু জরিমানা করেই দায়িত্ব শেষ করে। তারা আবারও কারসাজি করায় ডিমের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ কৃষি সংবাদ
Theme Customized By Shakil IT Park