কৃষি সংবাদ ডেস্ক:
হাতির স্মরণশক্তি প্রখর—এ কথা কমবেশি সবারই জানা। কিন্তু পাখিদের মধ্যে দীর্ঘসময় ধরে যে কোনো ঘটনা মনে রাখতে পারে কাক। নতুন এক গবেষণা থেকে এমন তথ্য জানা যায়।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, কাককে যদি কেউ বিরক্ত করে বা কষ্ট দেয়, তাহলে কমপক্ষে ১৭ বছর তা মনে রাখে। এজন্যই হয়তো সবচেয়ে বুদ্ধিমান পাখি বলা হয় কাককে। এরা যে কোনো অবয়ব বা চেহারাও ভালো করে মনে রাখতে পারে দীর্ঘদিন পর্যন্ত।
মূলত ২০০৬ সালে গবেষণাটি শুরু হয়। তখন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক জন মার্জলফ একটি ভয়ংকর মুখোশ পরে সাতটি কাককে খাঁচায় বন্দি করেন। তবে কিছু সময় পর তাদের অক্ষত অবস্থায় ছেড়ে দেন। কিন্তু এর আগে পাখিগুলোর পায়ে পরিয়ে দেন শনাক্তকরণ আংটি।
মার্জলফ নিউইয়র্ক টাইমকে বলেন, ওই ঘটনার পর তিনি এবং তার সহকারী প্রায়ই সেই মুখোশটা পরে ক্যাম্পাসের মধ্যে ঘুরে বেড়াতেন। সে সময় ওই এলাকার কাকদের খাবার খেতে দিতেন এবং তাদের প্রতিক্রিয়া লিখে রাখতেন।
স্মৃতি হাতড়ে তিনি আরও বলেন, একবার ৫৩টি কাকের একটি দলের মধ্যে অন্তত ৪৭টির রোষানলে পড়েন। গবেষক হিসাব করে দেখেন, মুখোশ পরে বন্দি করা কাকের চেয়ে তিরস্কারকারী কাকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৭ গুণ। তার মানে, নিজেরা তো ভোলেইনি, তাদের বাবা-মা, পরিবার, এমনকি আশপাশের দলেও খবরটি পৌঁছে গিয়েছিল। আক্রান্ত কাকগুলোই তাদের হুমকিজনক মুখোশ ব্যক্তি সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিল।
দলবদ্ধভাবে কাকদের এমন তিরস্কার বা কর্কশ চিৎকারে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয়েছিল ২০১৩ সালে। পরবর্তী বছরগুলোয় সেই প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবণতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কমে আসে আক্রমণাত্মক কাকের সংখ্যাও।
গবেষণা শুরুর ১৭ বছর পর ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এসে হাঁটার সময় কোনো তিরস্কারে ঘটনা ঘটেনি।
গবেষণার অংশ হিসেবে দলের সদস্যরা একবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মতো মুখোশ ব্যবহার করেন। কিন্তু তারা কাকদের খাওয়ানোর সময় কোনো ধরনের রোষের মুখে পড়েননি। পরবর্তী সময়ও নির্যাতনের শিকার হননি।
‘বিপজ্জনক’ মুখোশ পরা স্বেচ্ছাসেবক বিল পোচমারস্কি বলেন, কাছে গেলে পাখিগুলো ক্ষেপে ক্রমাগত চিৎকার করত। স্পষ্ট বোঝাই যাচ্ছিল, তারা কোনো বিষয়ে আমার ওপর মহাবিরক্ত।
কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সরঞ্জাম তৈরি ও গণনা করার মতো অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা রয়েছে কাকের।