চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে রিকশাভ্যানে ডজন প্রতি ১৪০ টাকা ডিম বিক্রি করে সাড়া ফেলেছেন পাঁচ যুবক। তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাজারে যেখানে ডজন প্রতি ডিম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা বিক্রি হয়ে আসছে, সেখানে ১৪০ টাকায় বিক্রির বিষয়টি রীতিমতো ভাইরাল হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
লাগামহীন ডিমের বাজারে ওই যুবকেদর প্রশংসায় ভাসাচ্ছে নেটিজেনরা। নিত্যপণ্য নিয়ে গড়ে উঠা সিন্ডিকেট ভাঙতে এমন উদ্যোগ আরও নেওয়া দরকার বলে অভিমত তাদের।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ৩ হাজার ডিম বিক্রি করেন মোহাম্মদ আরিফসহ পাঁচ বন্ধু। এতে কল্পনাতীত সাড়া পান তারা।
এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে নগরের চকবাজারের শাহানশাহ মার্কেট ও অলিখাঁ মসজিদের সামনে দুইটি রিকশাভ্যানে ৬ হাজার ডিম বিক্রি করেন তারা। এ কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে আসেন আরও ৬ তরুণ।
চকবাজারে ডিম কিনতে আসেন গৃহিণী আকলিমা চম্পা। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি চকবাজারে ১৪০ টাকায় ডিম বিক্রি হবে।
ডিম কিনতে যাওয়া খুকী বেগম বলেন, ডজন ১৪০ টাকা করে ডিম নিলাম। আমাদের সেবা দিতেছে ওনি এখানে। খুব ভালো লাগতেছে এই দামে কিনতে পেরে।’
এইচ এম বেলাল নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ জানাই যারা এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। আর সব জায়গায় সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে, আমাদের সচেতন হতে হবে, তাহলে দেশ সুন্দর হবে।
উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আরিফ জানান, ডিমের বাজারে যখন নৈরাজ্য দেখা দিল তখন আমরা ভাবছিলাম কী করা যায়। এ দলে ছিল রেজাউল করিম, নুর উদ্দিন, ইমরানও। বোয়ালখালীর পরিচিত মুরগির খামার থেকে ডিম এনে নগরে ন্যায্যমূল্যে বিক্রির বিষয়টি মাথায় আসে আমার। খোঁজখবর নিয়ে হিসাব করে দেখলাম প্রতি ডজন ডিমে খরচই পড়ছে ১৪০ টাকা। নিজের ক্ষুদ্র ব্যবসার পাশাপাশি স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ১৪০ টাকায় ডিম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই আমরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ উৎসাহ দিতে থাকে। প্রথম দিন আমরা ভালো সাড়া পাই। আমরা খুশি হই, সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে।
৩৮ বছর বয়সী তিন সন্তানের বাবা আরিফ বলেন, রাতেই আমরা সিদ্ধান্ত নিই, দ্বিতীয় দিন আমরা ৬ হাজার ডিম বিক্রি করবো। যখন চকবাজারের স্পটে এলাম সাইফুল, মাসুদ, শুক্কুর, আহসান, বাবলুরা এসে জানালেন স্বেচ্ছাশ্রম দেবেন ডিম বিক্রির কাজে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, সামাজিক সংগঠন, খামারিদের সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চাইলে যেকোনো সংকটে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে। আমাদের দেখে যদি অন্যরা এগিয়ে আসেন তাহলেই সার্থকতা।
আড়তদারদের দাবি, সরাসরি উৎপাদক পর্যায় থেকে তাদের ডিম সংগ্রহ করার সুযোগ খুবই কম, হাতঘুরে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীদের মারফতেই তাদের ডিম সংগ্রহ করতে হয়। মধ্যসত্ত্বভোগীদের বাদ দিয়ে কোনোভাবেই দর নির্ধারণ করা যাবে না।