1. admin@krishisangbad.com : admin :
রাস্তা ও পানি না থাকায় শুটকি প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পে ধীরগতি - কৃষি সংবাদ
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩২ অপরাহ্ন

রাস্তা ও পানি না থাকায় শুটকি প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পে ধীরগতি

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৫২ বার পঠিত

কৃষি সংবাদ প্রতিবেদক:

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া পাড়া-সমিতি পাড়া নাজিরার টেকসহ পাশ্ববর্তী এলাকার বাস্তুচ্যুত জেলেদের খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে হবে পুনর্বাসন। বাস্তুচ্যুত ৪ হাজার ৬০৯টি পরিবারের কর্মসংস্থান হবে ‘কক্সবাজার জেলায় শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন’ প্রকল্পে। কিন্তু এই প্রকল্পের কাজে অগ্রগতি কম। প্রকল্প এলাকা বুঝে পেতে দেরি হওয়া, প্রয়োজনীয় রাস্তা না থাকা, প্রয়োজনীয় পানির অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ হওয়ায় প্রকল্প অগ্রগতি মাত্র ৩৫ শতাংশ। এ কারণে প্রকল্প মেয়াদ আরো দেড় বছর বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালে ১৯৮.৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব পায় মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) সুরাইয়া আখতার জাহান বলেন, দেশের অর্থনীতিতে এই প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আর এটি হলো খুরুশকুল আশ্রায়ণ প্রকল্পের মানুষদের কর্মসংস্থান ও পূনর্বাসন প্রকল্প। প্রকল্প এলাকা বুঝে পেতে দেরি হওয়া, নিজস্ব রাস্তা না থাকা এবং প্রয়োজনীয় পানি না থাকায় কাজের অগ্রগতি কম। তবে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রকল্পের নিজস্ব রাস্তা তৈরির জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন। যাতে করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্প এলাকায় রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এছাড়াও আমরা আশ্রায়ণ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে যাতে করে সাময়িক চলাচল ও মালামাল পরিবহণের অনুমতি দেওয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, ডিপিপিতে নতুন কিছু কম্পোনেন্ট যুক্ত করা হয়েছে। যেগুলো প্রকল্পের স্থায়িত্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচানা করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. শামসুজ্জামান জানান, ৪৫ একর এলাকা জুড়ে চলছে কর্মযজ্ঞ। এর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ বর্গমিটার আয়তনের অবতরণ শেড, ১ হাজার ৮৬০ বর্গমিটার আয়তনের চারতলা বিশিষ্ট ল্যাব, অফিস, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাম ডরমেটরি, ব্যবসায়ীদের জন্য ৩০০টি স্টোর কাম অফিস ঘর (এর মধ্যে বড় ৫০ টি, ছোট ১৫০ টি এবং মিডিয়াম ১০০ টি ঘর রয়েছে), ৩৬টি শুঁটকি বিক্রয় কেন্দ্র, ১০টি টয়লেট জোন, প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি স্থাপন, ইটিপি, এসটিপি ও ডব্লিউটিপি, ৩টি জেনারেটরসহ ১টি বৈদ্যুতিক সাবষ্টেশন স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় ৩৫০টি গ্রীণহাউজ মেকানিক্যাল ড্রায়ার এবং ৩০টি মেকানিক্যাল ড্রায়ার স্থাপনের কাজ চলছে। গ্রীণহাউজ মেকানিক্যাল ড্রায়ার দেখভালের দায়িত্ব পালন করবে পূনর্বাসিত জেলে ও ব্যবসায়ী সমন্বিত কমিটি। এসব ড্রায়ারের মাধ্যমে প্রতি তিনদিনে ১৫৫ কেজি শুটকি উৎপাদন হবে। ৩০টি মেকানিক্যাল ড্রায়ার দেখভাল করবে বিএফডিসি। এ ড্রায়ারের মাধ্যমে প্রতিদিন ৩০০ কোজি শুটকি মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজের মাত্র ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ কারণে প্রকল্পের মেয়াদ আরো দেড় বছর বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪৫ একর জমিতে সীমানা দেওয়াল, ৪৩৩০ বর্গমিটারবিশিষ্ট জলাধার নির্মাণ, ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্ট, ৬ টি বজ্র নিরোধক যন্ত্র স্থাপন, গ্রীন হাউজ ড্রায়ারের ছাদে পলিথিনের পরিবর্তে পলিকার্বোনেট শীটের ব্যবহার ইত্যাদি কিছু বিষয় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, সীমানা প্রাচীর না থাকায় প্রায় সময়েই মালামাল চুরি হয়ে যাচ্ছে। নেই কোনো রাস্তা। বৃষ্টি হলেই কাজ করা কষ্ট কর হয়ে উঠে।

প্রকল্প সূত্রে জানাগেছে, গ্রীণ হাউস বেইজড মেকানিক্যাল ড্রায়ার এবং মেকানিক্যাল ড্রায়ার স্থাপনের মাধ্যমে প্রতি বছর গড়ে ৭ হাজার ৭৫ মেট্রিট টন শুটকি উৎপাদন করা হবে। এ জন্য প্রায় ৩৬ হাজার মেট্রিক টন কাঁচা মাছ প্রয়োজন হবে। যার বাণিজ্যিক মূল্য হবে প্রায় ১ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা (প্রতি কেজি ২০০০ টাকা করে)। এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ বাজারের চেয়ে রফতানির দিকে জোড় দেওয়া হবে।

প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতির বিষয়ে প্রকল্পটির পরিচালক মো. শামসুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালে প্রকল্প অনুমোদন পেলেও ভূমি উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে প্রকল্প এরিয়া বুঝে পেতে দেরি হয়েছে। প্রকল্প সাইটে কাজ শুরু করতেই প্রায় দুই বছর দেরি হয়েছে। তাই আমাদের আরও দেড় বছর লাগবে কাজ শেষ করতে। আরও কিছু কাজ যুক্ত হবে। এতে নতুন করে আরো প্রায় ১৪ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ কৃষি সংবাদ
Theme Customized By Shakil IT Park