1. admin@krishisangbad.com : admin :
ডিম আমদানিতে ভাটা, মাস্টার প্ল্যান করছে বিপিআইসিসি - কৃষি সংবাদ
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

ডিম আমদানিতে ভাটা, মাস্টার প্ল্যান করছে বিপিআইসিসি

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৭৩ বার পঠিত

সুমন ইসলাম :

বাজারে ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় আমদানিতে ভাটা পড়েছে। দুই মাসে দেশে ৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২৭ কোটি ৩০ লাখ ডিম আমদানির অনুমোদন দিলেও এসেছে মাত্র ১২ লাখ ডিম। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তিন দফায় ২৭ কোটি ৩০ লাখ ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। গত ৮ অক্টোরব ৭টি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে চার লাখ আমদানির অনুমতি দিয়েছিল। পরে আবার ১৭ অক্টোবর ১২ প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেয়। সর্বশেষ গত ১৯ নভেম্বর ১৮ কোটি ৮০ লাখ ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ডিম আমদানির সঙ্গে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়ার কারণে আমদানি ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে কিছুটা সমস্যা দেখা দেওয়ায় ডিম আমদানিতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এসব ডিম বাজারজাত করতে হবে। এ ছাড়াও বিশ্ব প্রাণি স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী বার্ড ফ্লু-মুক্ত জোনিং বা কম্পার্টমেন্টালাইজেশনের স্বপক্ষে রপ্তানিকারক দেশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জোনিং বা কম্পার্টমেন্টালাইজেশনের সার্টিফিকেট বা ঘোষণা দাখিল করতে হবে। আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকারের মাধ্যমে নির্ধারিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড-ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত মর্মে সনদ দাখিল করতে হবে। সরকার-নির্ধারিত শুল্ক-কর পরিশোধ ও অন্যান্য বিধি-বিধান প্রতিপালন করতে হবে। ডিম আমদানির প্রতি চালানের অন্যূন ১৫ দিন আগে সংশ্লিষ্ট সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে। আমদানির অনুমতি পাওয়ার পরবর্তী ৭ দিন পর পর অগ্রগতি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করার শর্ত দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্পর থেকে এ পর্যন্ত যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ১২ লাখের মতো মুরগির ডিম আমদানি হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় এ আমদানি খুবই নগণ্য। তবে আমদানি কম হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রায় ২৭ কোটির বেশি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ার খবর পেয়েছি আমরা। কিন্তু আমাদের কাছে আসছে কম। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই আমদানিকারকরা সরকারের দেওয়া শর্তপূরণে ব্যর্থ হচ্ছেন। অপরদিকে এখন বাজারে ডিমের সরবরাহ বেশি দাম কমে এসেছে। লোকসানের ভয়েও অনেকে রিস্ক নিতে চাচ্ছেন না। রয়েছে ডলার সংকটও।

আমদানিকারকরা বলছেন, ডিম আসার পর নমুনা সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে কোয়ারেন্টিন সনদ নিয়ে তা আবার বন্দরে পৌঁছাতে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগবে। অন্যদিকে স্থলবন্দরে অপেক্ষায় থাকা ট্রাকের পেছনে প্রতিদিন পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা বাড়তি মাশুল গুনতে হবে। এতে আমদানি খরচ বেড়ে যাবে।

বেনাপোল বন্দরের কোয়ারেন্টিন স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তপু কুমার সাহা বলেন, ডিম আমদানি সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনে বলা আছে, ডিম আমদানির ক্ষেত্রে তিনটি রোগের পরীক্ষা আইএসও সার্টিফায়েড ল্যাব থেকে করাতে হবে। ঢাকা সাভারের সরকারি কিউসি ল্যাব অথবা আইএসও সার্টিফায়েড অন্য কোনো বেসরকারি ল্যাব থেকে করাতে হবে। এতে ৪-৫ দিন সময় লাগছে। এ ছাড়া ডিম খালাস করা যাবে না।

বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) সূত্র জানায়, বন্যা ও বৃষ্টির কারণে অনেক খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাখ লাখ মুরগি মারা গেছে। এ কারণে বাজারে ডিমের দাম বৃদ্ধি পেলেও এখন কিছুটা কমে এসেছে। তবে ডিম উৎপাদনকারীদের সহায়তায় সরকারকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। কারণ একজন খামারি এখন শুরু করলেও আগামী ৩-৪ মাস বিনিয়োগ করতে হবে। তার পরেই আসবে ফসল।

নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক বিপিআইসিসির একজন কর্মকর্তা জানান, ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণসহ খামারিদের উন্নয়নে কাজ করছে বিপিআইসিসি। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে মিটিং করা হবে। পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে। এ ছাড়াও দেশে যাতে ভবিষ্যতে ডিমের উৎপাদন ও সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকে এ জন্য একটি লংটার্ম পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। করা হবে একটি মাস্টারপ্লানও। এ জন্য বিপিআইসিসির শীর্ষ কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন। এ বিষয়ে সরকারের কাছে বিপিআইসিসির প্রস্তাবনাও তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

কাপ্তান বাজার ও তেজগাঁও পাইকারি বাজারের আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন খামার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অনেকে এখন ডিম উৎপাদনে ফিরেছেন। ফলে বাজারে ডিমের সরবরাহ বেড়েছে। কমেছে ডিমের দাম। তবে আমদানি করা ডিম প্রসঙ্গে পাইকাররা জানান, তেজগাঁও বাজারে ছোট ও মাঝারি খামার থেকেই ডিমের চালান আসছে। আমদানি করা ডিম আসছে না। তবে আগের চেয়ে ডিমের সরবরাহ অনেক বেশি।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ কৃষি সংবাদ
Theme Customized By Shakil IT Park