কৃষি সংবাদ প্রতিবেদক নাটোর :
জেলার গুরুদাসপুরে অ্যানথ্রাক্স রোগের বিস্তার রোধে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সমন্বিতভাবে কাজ করছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসন। চিকিৎসার পাশাপাশি চলছে জনসচেতনতা সৃষ্টির বিভিন্ন কার্যক্রম।
অক্টোবরের প্রথমার্ধে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রাণিসম্পদ বিভাগ নমুনা সংগ্রহ করে সিরাজগঞ্জের আঞ্চলিক রোগ গবেষণাগারে প্রেরণ করে। তিনটি নমুনার মধ্যে একটিতে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু পাওয়া যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ ঐ গ্রামের দুই হাজার ৩০০ গরু-ছাগলকে অ্যানথ্রাক্স টিকা প্রদান করে। পরে পাশের বেড়া গঙ্গারামপুর এবং মামুদপুর গ্রামে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে প্রাণিসম্পদ বিভাগের সংক্রমণশীল রোগতত্ত্ব ইউনিটের একটি দল গত শনিবার এলাকায় এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে। এ দু’টি গ্রামে বর্তমানে ১৪ হাজার গরু-ছাগলকে বিনামূল্যে টিকা প্রদান করা হচ্ছে ।
গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমণশীল অ্যানথ্রাক্স রোগের জীবাণু পাওয়া গেছে এ পর্যন্ত মাংস প্রক্রিয়াকরণ কাজে নিয়োজিত ছয়জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের লক্ষণ দেখা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রমণশীল রোগ গবেষণা কেন্দ্রের মেডিকেল টিম গত সোমবার মোল্লাপাড়া গ্রামে ছয়জনের মধ্যে তিনজনকে চিকিৎসা প্রদান করেছে। এ টিম নমুণা গ্রহণ করে ঢাকায় নিয়ে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মুজাহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ অ্যানথ্রাক্স রোগের সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাচ্ছে ।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জুলফিকার মোঃ আখতার হোসেন জানান, শুরুতেই অ্যানথ্রাক্স রোগে প্রাণি আক্রান্তের বিষয়টি আমাদের নজরে আসায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে। টিকাদান কার্যক্রম চালু করার পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টিতে লিফলেট বিতরণ এবং মাইকিং করা হচ্ছে, চলছে উঠান বৈঠক।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা আক্তার বলেন, প্রাণিসম্পদ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন নিবিড়ভাবে কাজ করছে। অসুস্থ গরু জবাই করার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। জবাই করা গরুকে নিরাপদে মাটিচাপা দেওয়া ছাড়াও দু’জন মাংস প্রক্রিয়াকরণকারীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আর্থিক দন্ড প্রদান করা হয়েছে।